Header Ads Widget

হাদীসের পরিচয়, হাদীস কত প্রকার ও কি কি?

Hadith

হাদীস কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি?

হাদীসের সংজ্ঞাঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নবুয়াতী জীবনের সকল মুখরিত বানী, কর্ম এবং মৌনসম্মতিকে হাদীস বলে।
ইসলামে মৌলিক গ্রন্থ হলো আল ক্বুরআন এবং হাদীস তারই ব্যাখ্যা স্বরূপ।
হাদীস বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত করা যায়।

হাদীসের প্রকারভেদঃ

উল্লেখিত সংজ্ঞা অনুযায়ী হাদীস ৩ প্রকারঃ

১। ক্বওলী হাদীস।
২। ফে'লী হাদীস।
৩। তাকরীরী হাদীস।

ক্বওলী হাদীসঃ

শরীয়তের বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যা বলেছেন, অর্থাৎ যে হাদীসে তাঁর কোন মুখরিত বানী বিবৃত হয়েছে তাকে ক্বওলী হাদীস বলা হয়।

ফে'লী হাদীসঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর কার্জকর্ম, চরিত্র ও আচার-আচরণের মধ্যে দিয়েই ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান ও রীতিনীতি পরিস্ফুট হয়েছে। অর্থাৎ যে হাদীসে তাঁর কোন কাজ বা কর্মের বিবরণ উল্লেখিত হয়েছে তাকে ফে’লী হাদীস বলা হয়।

তাকরীরী হাদীসঃ

সাহাবীগণের যে সব কথা বা কাজ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর অনুমোদন ও মৌনসম্মতি প্রাপ্ত হয়েছে, সে ধরনের কোন কথা বা কাজের বিবরণ হতেও শরীয়াতের দৃষ্টিভঙ্গি জানা যায়। এ ধরনের হাদীসকে তাকরীরী হাদীস বলা হয়।

বিশ্বস্ততা অনুযায়ী হাদীস তিন প্রকারঃ

১।সহীহ হাদীস।
২।হাসান হাদীস।
৩।যঈফ হাদীস।

গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী হাদীস দু'প্রকারঃ

১) মাকবূল (গ্রহণযোগ্য) হাদীস।
২) মারদূদ (অগ্রহণযোগ্য) হাদীস।

মাকবূল হাদীস দু'প্রকারঃ

১।সহীহ হাদীস।
২।হাসান হাদীস।

মারদূদ হাদীস দু'প্রকারঃ

১। যঈফ হাদীস।
২। মউযু হাদীস

সহীহ হাদীস কাকে বলে?

১) সহীহ বা বিশুদ্ধ হাদীসঃ

যে হাদীস ৫টি শর্তে পরিপূর্ণ থাকে যেমন, মুত্তাসিল আদালত, যাবত, গুণ সম্পন্ন, যাবতীয় দোষত্রুটি ও শায মুক্ত তাকে সহীহ হাদীস বলে।
হাসান হাদীস কাকে বলে?

২) হাসান হাদীসঃ

সহীহ হাদীসের মতো সব শর্ত পরিপূর্ণ শুধু রাবীর যাবত বা ধারণ ক্ষমতার গুণের ঘাটতি থাকে তাকে হাসান হাদীস বলে।
যঈফ হাদীস কাকে বলে?

যঈফ বা দুর্বল হাদীসঃ

যে হাদীস হাসান হাদীসের শর্ত পুরণ করতে পারেনা তাকে যঈফ হাদীস বলে।
মউযু হাদীস কাকে বলে?

মউযু বা জাল হাদীসঃ

যে হাদীস রাসুলুল্লাহ (সাঃ )-এর নামে মনগড়া বা মিথ্যা কথা রটনা করা হয়, সে হাদীসকে মাওযূ‘ হাদীস বলে।

মা‘রূফ হাদীস কাকে বলে?
কোন মাকবূল বা গ্রহণযোগ্য রাবীর হাদীস যদি অন্য দুর্বল রাবীর বর্ণিত হাদীসের বিরোধী হয়, তাহলে সেই গ্রহণযোগ্য রাবীর হাদীসকে মা‘রূফ হাদীস বলে।

মুনকার হাদীস কাকে বলে?
কোন দুর্বল রাবীর বর্ণিত হাদীসের বিরধিতায় অন্য কোন নির্ভরশীল রাবীর বর্ণিত হাদীস উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই দুর্বল রাবীর হাদীসকে মুনকার হাদীস বলে।

রাবী কাকে বলে?
যিনি হাদীস বর্ণনা করেন তাকে রাবী বলে।

সনদ কাকে বলে?
রাবীদের পরস্পর ধারাবাহিকতাকে সনদ বলে।

মতন কাকে বলে?
হাদীসের মূল শব্দ সমূহকে মতন বলে।

মতন বা রাবীদের সিলসিলা দিক থেকে হাদীস ৩ প্রকারঃ

১। হাদীসে মারফু
২। হাদীসে মাওকুফ
৩। হাদীসে মাকতু

মারফু হাদীস কাকে বলে?
যে সমস্ত হাদীসের সনদ বা রাবীদের ধারাবাহিকতা শুরু থেকে শেষ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছায়, সেই সমস্ত হাদীসেকে মারফু হাদীস বলে।

মাওকুফ হাদীস কাকে বল?
যে সমস্ত হাদীসের সনদ শুরু থেকে শেষ সাহবী পর্যন্ত পৌঁছায়, সেই সমস্ত হাদীসেকে মাওকুফ হাদীস বলে। এই হাদীসকে আবার আসার বল।

মাকতু হাদীস কাকে বলে?
যে সমস্ত হাদীসের সনদ শুরু থেকে শেষে তাবেঈ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছায়, সেই সমস্ত হাদীসেকে মাকতু হাদীস বলে।

গরীব হাদীস কাকে বলে?
কোন হাদীসের রাবী সংখ্যা যদি মাত্র ১ জন হন, তবে সেই হাদীসকে গরীব হাদীস বলে।

আজিজ হাদীস কাকে বলে?
যদি কোন একই হাদীস রাবী কমপক্ষে ২ জন হয়ে থাকে এবং এর চেয়ে কম না হন, তবে সেই হাদীসেকে আযীয হাদীস বলে।

মাশহুর হাদীস কাকে বলে? 
যদি কোন একই হাদীসের রাবী দুয়ের অধিক হয়ে থাকেন, তবে সেই হাদীসকে মাশহুর হাদীস বলে।

মুহাদ্দীসের কাকে বলে?
মুহাদ্দীসের পরিচয় বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন

হাদীসে কুদসী কাকে বলে?

হাদীসে কুদসীঃ

যে হাদীসের বর্ণনায় সরাসরি আল্লাহর দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয় যে, "আল্লাহ বলেন" এই ভাবে উল্লেখিত হাদীসেকে হাদীসে কুদসী বলে।
উদাহরণঃ
নবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ আমার রহমত আমার রাগকে অতিক্রম করেছে।
(হাদীসে কুদসী, সহীহ মুসলিম)

সহীহ হাদীস কয়টি ও কি কি?
সহীহ হাদীস দুটি।
১) সহীহুল বুখারী।
২) সহীহ মুসলিম।

প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ কয়টি ও কি কি?
প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ ৬টি। অনেকে আবার সিহাহ সিত্তাহ বা ছয়টি সহীহ (বিশুদ্ধ) হাদীস গ্রন্থও বলে থাকে। এই প্রসিদ্ধ ৬টি হাদীস গ্রন্থকে একত্রে কুতুবে সিত্তা বলা হয়।

কুতুবে সিত্তা হাদীস গ্রন্থের তালিকাঃ

১) সহীহুল বুখারী।

ইমাম বুখারী (রহঃ)

২) সহীহ মুসলিম।

ইমাম মুসলিম (রহঃ)

৩) জামি তিরমিযী।

ইমাম তিরমিযী (রহঃ)

৪) সুনানে আবু দাউদ।

ইমাম আবু দাউদ (রহঃ)

৫) সুনানে নাসায়ী।

ইমাম নাসাঈ (রহঃ)

৬) সুনানে ইবনে মাজাহ।

ইমাম ইবনু মাজাহ (রহঃ)


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ