নিয়ম না জানা মুসলিম

    Muslims who do not know the rules



    আমরা সাধারণত জানি মুসলিমদের দু'ভাগে ভাগ করা হয় । --
    ১। নিয়ম মানা মুসলিম।
    ২। নিয়ম না মানা মুসলিম।

    কিন্তু আসলে মুসলিমদের তিন ভাগে ভাগ করা যায় । --
    ১। নিয়ম মানা মুসলিম
    ২। নিয়ম না মানা মুসলিম
    ৩।নিয়ম না জানা মুসলিম
    কথাটি শুনে অনেকে হয়তো অবাক হচ্ছেন কিন্তু দুঃখ জনক হলেও কথাটি সত্য । আবার অনেকে ভাবতে পারে এতে অবাক হওয়ার কি আছে । মানুষের কত কিছু অজানা থেকেই যায় । এখানে একটি দৃষ্টান্ত দিলে বুঝা যাবে যে, কথাটি আসলেই অবাক জনক । ধরুন একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণীর দু'জন ছাত্র আছে । একজন আব্দুর রহমান আরেকজন আব্দুর রহিম । আব্দুর রহমান একজন মেধাবী ছাত্র তবুও তার অনেক কিছু অজানা থেকে যেতেই পারে এতে অবাক হবার কিছুই নেই । কিন্তু আরেক জন ছাত্র আব্দুর রহিম চতুর্থ শ্রেণীর বিষয় সম্বন্ধেতো দূর থাক 'অ' থেকে 'ঁ' পর্যন্ত জানে না । যদি এমনটি হয় তাহলে আসলেই কথাটি অবাক জনক । ঠিক এমনি অবস্থা একশ্রেণী মুসলিমদের । তারা নিজেদের ধর্মের বুনিয়াদি জিনিস সম্বন্ধে অজ্ঞ । যেমন --

    ★একজন মুসলিমের 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নেই, বলে এটা নাকি ভিক্ষুকের ভিক্ষা চাওয়ার দু'আ। অথচ এটি তাওহীদে প্রবেশ করার মূল চাবিকাঠি । যার মাধ্যমে সমস্ত বাতিল মাবুদ গুলোকে বর্জন করে এক আল্লাহকে মেনে নেওয়া বা আল্লাহর একত্ববাদ কে মেনে নেওয়া । এছাড়াও কবরে প্রথম প্রশ্ন করা হবে ' তোমার রব কে?'

    দ্বীন বা ধর্ম কি?

    ★একজন মুসলিমের এটা জানা নেই, তার দ্বীন (ধর্ম) কি? উত্তরে বলে ধর্ম মুসলমান । আসলে ধর্ম কি মুসলমান না ইসলাম । আর এটাই হবে কবরের দ্বিতীয় পশ্ন 'তোমার দ্বীন (ধর্ম) কী ?'
    ★একজন মুসলিমের নবী কে বা সে কোন্ নবীর উম্মত তার এটা জানা নেই । আর কবরে তৃতীয় প্রশ্ন করা হবে এই সম্বন্ধেই।

    নামাজের নিয়ম

    ★ইসলামে প্রবেশের পর বা ঈমান আনার পর প্রথম যেটা কাজ সেটা হলো স্বলাত (নামাজ) আদায় করা। কিন্তু কি করে ওযু করতে হয়, কি করে স্বলাত (নামাজ) আদায় করতে হয় এবং কোন্ ওয়াক্তে কত রাকাত ফরজ স্বলাত (নামাজ) আদায় করতে হয় সে বিষয়ে কোন ধারনায় নেই । অথচ পরকালে মানুষের আমলের মধ্যে সর্ব প্রথম 'স্বলাত (নামাজ)' এর হিসেব হবে।
    আবার যদিও বা কারো স্বলাতের (নামাজের) পদ্ধতি গুলো জানা থাকে তার পরে দেখা যাবে কোরআনের কোন সুরা জানে না এমনকি সূরা ফাতিহা পর্যন্ত তাঁর জানা নেই । অথচ হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি ফাতিহাতুল কিতাব অর্থাত্‍ সূরা ফাতিহা পাঠ করবে না, তাঁর স্বলাত (নামাজ) হবে না ।
    এই রকম করে মুসলিমদের আরো অনেক কিছু না জানা বিষয় গুলো তুলে ধরা যায় । কিন্তু আর এই সম্বন্ধে কিছু লিখছি না । তবে এতটুকু বলতে পারি আমাদেরকে ইসলামের বুনিয়াদি জিনিসগুলো জানতে হবে। হাদীসে এসেছে 'প্রত্যেক মুসমানের জন্য দ্বীনি (ধর্মীয়) জ্ঞান অর্জন করা ফরজ' । এবং আল্লাহ কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিল করেছেন, 'পড়' । তার পরেও মুসলিম জাতি শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষায় । তাইতো কবি আল্লামা মহম্মদ ইকবাল আক্ষেপ করে বলেছেন,
    'ও জামানে মে মোয়াজ্জাজ থে মুসলমান হোকার
    আজ তুম জালিলো খার হুয়ে তারিখে কুরান হো কার'।
    এমনও এক সময় ছিল যখন আমরা বিশ্বের শীর্ষ স্থানে ছিলাম । আর আজ আমরা সারা বিশ্বে লাঞ্ছিত, ঘৃণিত, পদদলিত। তাই আজ আমরা যারা শিক্ষিত তাদের দায়ীত্ব, যারা জানে না তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া । কারণ আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন, 'দ্বীনের একটি কথা জানা থাকলেও অন্যজনকে জানিয়ে দাও'। এবং যারা জানে না তাদের উদ্দেশ্য মহান আল্লাহ বলেন, 'যারা জানেনা তাঁরা যেন জানা মানুষের নিকটে জেন নেয়'। এমতো অবস্থায় সচেতন মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে সমাজকে সচেতন করার জন্য ।



    Next Post